‘ভাইরাস’ দেখছেন সাকিব
এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রায় প্রতিটি ম্যাচই বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। গত দুই বছরে ‘বদলে যাওয়া দল’টার এখন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা! দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা গেল না, সেটির ব্যাখ্যায় সাকিব বলেছেন ‘ভাইরাসে’র কথা!
এই ভাইরাসটা ছড়ায় দল টানা হারতে থাকলে। তখন আত্মবিশ্বাস যায় টলে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা হয়ে যায় গুমোট। ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি যায় হারিয়ে! দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাজেভাবে হারের পর সেটির প্রভাব পড়েছে ওয়ানডে সিরিজেও। তলানিতে ঠেকা আত্মবিশ্বাসটা আর হয়নি চাঙা। পরে ধবলধোলাই টি-টোয়েন্টিতেও। এভাবে ম্যাচের পর ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। সফর শেষ হয়েছে তিন সংস্করণে ৭-০ ব্যবধানে হারের লজ্জা নিয়ে!
টানা ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বাংলাদেশ কেন বের হতে পারেনি, সেটির ব্যাখ্যায় সাকিব বললেন ‘পরাজয়’ নামের ভাইরাসটার কথা, ‘টেস্টে অত ভালো করিনি। ওয়ানডে যখন এসে গেছে টেস্টের রেশটাই (হারের) খেলোয়াড়দের মধ্যে থেকে গিয়েছে। তার পর যখন ওয়ানডে ভালো হলো না ওই রেশটা আবার টি-টোয়েন্টির মধ্যে এল। এটা আসলে ভাইরাসের মতো। একটা থেকে আরেকটাতে ছড়ায়। যদি টেস্টে ভালো করতাম, ওয়ানডেও আরও ভালো করতে পারতাম। তখন টি-টোয়েন্টিও হয়তো ভালো হতো। জায়গাটা এত কঠিন, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ দেখলে বোঝা যায়। জয়ী দলের ড্রেসিংরুমে শুধু জয়ের কথা থাকবে। পরাজিত দলে ব্যক্তিগত বিষয় বা নেতিবাচক অনেক কথা চলে আসে। পরিবেশটাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। একজন দুজন ভালো করার চেয়ে দল কেমন খেলল সেটাই আসলে গুরুত্বপূর্ণ।’
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লড়ে হারের পর আজ আরেকটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা ম্যাচ দেখার প্রত্যাশা ছিল। ডেভিড মিলারের তাণ্ডবে সেটি হয়নি। তবে সাকিবের চোখে পড়ছে আরও কিছু কারণ, ‘মিলারের ক্লিন হিট অবশ্যই ব্যতিক্রম। ১০ ওভারে ওদের রান ৭৮। ওই সময়েও ৭-৮ রান দিয়ে ফেলেছি বাজে ফিল্ডিংয়ে। ওদের ১৬০-৭০ রানে আটকে রাখার সুযোগ ছিল। আমরা এত বেশি রান দিয়ে ফেলেছি তখন খুবই কঠিন ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। ২০০-২২০ করলে সেটা তাড়া করব এই মানসিকতা আমাদের এখনো তৈরি হয়নি। আমরা ওইখানেই আছি যে ১৬০-১৭০ বা সর্বোচ্চ ১৮০ করলে হয়তো তাড়া করতে পারব।’
দুঃস্বপ্নের সফরটা শেষ। বাংলাদেশ হয়তো কালই ধরবে দেশের বিমান। শুধু একটা বাজে সফর হিসেবে ভুলে যাওয়া নয়, বিদেশের মাটিতে ভবিষ্যতে ভাইরাসটা যেন ফিরে না আসে, সাকিব-মুশফিকদের সেই চিন্তাটা শুরু করতে হবে এখনই।
No comments